শুভ্রতা

ঢাকার ভেতরে ডেলিভারী চার্জ সম্পূর্ণ ফ্রি! ঢাকার বাইরে মাত্র ৮০ টাকা।

logo - shuvrota 236x90

+880-1905-17-99-17

Live support

পাইলস বা হেমোরয়েড কি?

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা: মানুষের যাবতীয় রোগসমূহের মধ্যে একটি যন্ত্রণাদায়ক রোগের নাম হেমোরয়েড বা পাইলস।  এই রোগটি মলদ্বারে হয়ে থাকে। সাধারণত মলদ্বারের অগ্রভাগের সামান্য ভেতরে বা বাইরের দিকে এক বা একাধিক গোলাকার অথবা সুচালো মাথাবিশিষ্ট গুটি গুটি বর্ধিতাংশ বের হয়; একে আমরা বলি/ গেজ বলে থাকি। মলত্যাগের সময় গেজ গুলির আকার ও অবস্থানের উপর ভিত্তি করে কারো অল্প বা বেশি বের হয়; এবং এই গেজ হতে কম বা বেশি রক্তপাত হয়ে থাকে। অনেক রোগীর আবার রক্তপাত হয়না। মূলত পাইলস রোগীর মলদ্বারের রক্তনালী ফুলে যায় এবং অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক ব্যাথার সৃষ্টি করে। যা একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপন ব্যহত করে। এই রোগের আরো অনেক শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করে। এলোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার পাশাপাশি ঘরোয়া চিকিৎসা ও রয়েছে প্রচুর। প্রাথমিক পর্যায়ে ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমেই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পাইলস ভালো হয়ে যায়।

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

সাময়িক বা দ্রুত পাইলস এর যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে রয়েছে নানা রকম পাইলস এর চিকিৎসা। অনেক রোগী ঘরোয়া চিকিৎসা গ্রহণ করে উপকৃত হয়েছেন বলেও জানা যায়। চলুন দেখি কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা যা মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিটে পাইলস এর যন্ত্রনা থেকে দিতে পারে আরাম।

অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার এর মাধ্যমে পাইলসের চিকিৎসা 

কিছু পরিষ্কার তুলো নিয়ে সামান্য পরিমান অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার লাগান । এবার মলদ্বার এর ব্যাথার সযায়গায় তুলো দিয়ে আস্তে করে চাপ দিন। একটু সহ্য করতে হবে, কারণ তুলো লাগানোর সাথে সাথেই ব্যাথার স্থানটি কিছুটা জ্বলবে, তারপর ধীরে ধীরে আরাম পেতে শুরু করবেন।  

এলোভেরা বা ঘৃতকুমারী এর মাধ্যমে পাইলসের ঘরোয়া চিকিৎসা

একটুকরো পরিষ্কার এলোভেরা নিন। এবার মলদ্বার এর ব্যাথার স্থানে আলতো করে ঘষে দিন।  এভাবে মিনিট খানেক লাগান। দ্রুত আপনার যন্ত্রনা কমে যাবে।মলদ্বারের ভেতরের পাইলসের জন্য একটি বিশেষ উপায়ে এলোভেরা ব্যবহার করতে হবে।  ১.৫ – ২ ইঞ্চি এলোভেরা কেটে নিন, তারপর ছাল ছাড়িয়ে শুধু জেল একটি পরিষ্কার মোটা  পলিথিনে মুড়িয়ে ফ্রিজে রেখে সহ্য করার মতো ঠান্ডা করুন। তারপর আলতোভাবে মলদ্বারের মুখে চেপে চেপে লাগান। এটি আপনার অর্শের ব্যাথা, জ্বালাপোড়া ও চুলকানি  ৮-১০ মিনিটের মধ্যে কমিয়ে আরাম দেবে।

অলিভ অয়েল এর মাধ্যমে চিকিৎসা

অলিভ অয়েল এর মাধ্যমে পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা বেশ কার্যকারি। দৈনিক তিন বেলা খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পূর্বে এক চা চামচ অলিভ অয়েল খাবেন। অলিভ অয়েল শরীরের প্রদাহ কমায় এবং মনসেচুরেটেড ফ্যাট উন্নত করতে সাহায্য করে। মলত্যাগ করতে অতিরিক্ত চাপ দিতে হয়না এবং মলত্যাগ খুব আরামদায়ক করে।

আদা ও লেবুর রস এর মাধ্যমে চিকিৎসা

পাইলস বা হেমোরয়েডের এর কারণগুলোর মধ্যে ডিহাইড্রেশন একটি উল্লেখযোগ্য কারণ। তাই পাইলস এর রোগের জন্য শরীরকে হাইড্রেড করা খুবই জরুরী। একটি মিশ্রণ দৈনিক দুই বার পান করে খুব সহজেই শরীরকে হাইড্রেড করতে পারেন। মিশ্রণটি খুবই সহজ। একটু আদার রস, একটু লেবুর রস ও একটু মধু সব মিলিয়ে এক চা চামচ পরিমান হলেই যথেষ্ট। ব্যাস এই মিশ্রণটি দিনে দুইবার করে খাবেন। আর পাশাপাশি প্রতিদিন ৮-১২ গ্লাস পানি পান করবেন। এতে শরীর হাইড্রেড হবে এবং ধীরে ধীরে আপনার পাইলস সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়ে যাবে ইন্-শা-আল্লাহ।

বরফ ব্যবহার এর মাধ্যমে চিকিৎসা

ঘরোয়া চিকিৎসা সমূহের মধ্যে বরফের ব্যবহার খুবই কার্যকরী ও আরামদায়ক ও বটে। সাময়িক স্বস্তির জন্য বরফের উপকার অনস্বীকার্য। একটি পরিষ্কার সুতী কাপড়ে কয়েক টুকরা বরফ পেঁচিয়ে নিয়ে পাইলস এর ব্যাথার স্থানে ৮-১০ মিনিট চেপে ধরুন; এতে করে মলদ্বারের রক্তনালী সমূহের রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া সচল রাখবে এবং পাইলস এর ব্যাথা উপশম করবে।

২১ দিনে নিয়ন্ত্রণ করুন পাইলস বা অর্শ রোগ 

প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে একটি কলা ও দুইটি রাস্পবেরি ভালো করে চামচ দিয়ে মিশিয়ে খেয়ে নেবেন। কিছুদিন খাওয়ার পরে আশাকরি ভালো পরিবর্তন পরিলক্ষিত হবে। অনেকের রোগের তীব্রতার উপর ভিত্তি করে সময় একটু বেশি ও লাগতে পারে। তাই যতদিন পুরোপুরি সুস্থ না  হন, ফল দুটি খেয়ে যাবেন। কলা’র পটাশিয়াম ও রাস্পবেরীর ফাইবার ও এন্টি-অক্সিডেন্ট রোগীর মূল নরম করবে ও ধীরে ধীরে পাইলস এর সমস্যা সম্পূর্ণ রূপে ভালো করবে।

যারা এই ঘরোয়া চিকিৎসা গ্রহণ করতে মনস্থ করেছেন, তারা অবস্যই বেশি বেশি আঁশ যুক্ত খাবার খাবেন, প্রতিদিন প্রচুর পানি খাবেন।  আর উপরে উল্লেখিত পাইলস প্রতিরোধের উপায় সমূহ মেনে চলবেন।

মুলার জুস পান করার মাধ্যমে পাইলসের ঘরোয়া চিকিৎসা

মুলার জুস পান করার মাধপ্যমে পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা আদিকাল থেকেই প্রচলিত। প্রতিদিন আধা কাপ মুলার জুস পান করার মাধ্যমে আপনি আপনার পাইলস বা অর্শ সম্পূর্ণরূপে ভালো করতে পারেন।

ডুমুর ভেজানো পানি পানের মাধ্যমে পাইলস এর চিকিৎসা 

ডুমুর ভেজানো পানি পান করার মাধ্যমে পাইলস এর চিকিৎসা করা যেতে পারে। কয়েকটি শুকনো ডুমুর ফল এক গ্লাস পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রেখে ভোর বেলা খালি পেটে  তার অর্ধেক পরিমান পানি খাবেন। বাকি অর্ধেক খাবেন বিকেলে বা সন্ধ্যায়। কিছুদিন খেলেই বুঝতে পারবেন পরিবর্তন।

বেদানার মাধ্যমে পাইলস এর চিকিৎসা 

ছোট সাইজ এর বেদানার দানাগুলো ছাড়িয়ে নিন। এরপর এক গ্লাস পরিমান পানির মধ্যে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। এই ফোটানো পানি ঠান্ডা হলে দৈনিক দুই বার পান করুন। পাশাপাশি পাইলস প্রতিরোধের উপায় গুলো মেনে চলুন। আশাকরি ঘরোয়া চিকিৎসা এর মাধ্যম আপনার রোগ সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে।

কাঁচা হলুদ এর মাধ্যমে ঘরোয়া চিকিৎসা

কাঁচা হলুদ এর মাধ্যমে পাইলস চিকিৎসা বেশ প্রচলিত। একটি ছোট সাইজ এর ২ টুকরা হলুদ এক গ্লাস পানিতে ভালো করে ফুটিয়ে দিনে দুইবার পান করুন। অর্শ সমস্যা থেকে পরিত্রান পাবেন।

ইসুবগুলের ভুষির মাধ্যমে পাইলস এর চিকিৎসা 

ইসুবগুলের ভুষির মাধ্যমে পাইলস চিকিৎসা অত্যান্ত কার্যকারী। প্রতিদিন রাত এ শোবার পূর্বে ইসুবগুল ভেজানো এক গ্লাস পানি পান করবেন। আবার ঘুম থেকে উঠে ভোর বেলা আরেক গ্লাস পান করবেন। সাথে আঁশযুক্ত খাবার খাবেন ও প্রচুর পানি পান করবেন। আশাকরি চমৎকার ফল পাবেন।

 শেষকথাঃ

পরিশেষে, পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা এর মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ের পাইলস সাধারণত ভালো হয়ে যায়। কিন্তু একটু অসুখের তীব্রতা বেড়ে গেলে ঘরোয়া চিকিৎসা আপনাকে সুস্থ না ও করতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে অভিজ্ঞ ডাক্তার এর শরণাপন্ন হতে হবে। যদি সময়মতো চিকিৎসা না নেন, তাহলে হয়তো অপারেশন পর্যন্ত ও যেতে হতে পারে। 

আরো পড়ুন:

৪ টি কার্য্যকরী ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট – দ্রুত শরীরের ওজন কমান

হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ সমূহ ও হেপাটাইটিস বি হলে করনীয় – আরো অনেক কিছু

2 Responses

Leave a Reply